জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় || ডি ইউনিট (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) ২০২৪-২৫ || শিফট-১ (14-02-2025) || 2025

All Written Question

1

ষ-ত্ব বিধানের চারটি নিয়ম লেখ। 

Created: 1 month ago | Updated: 1 month ago
Updated: 1 month ago
নিয়ম উদাহরণ 
 'ঋ', ঋ (ৃ) কার এবং 'র' (`,্র) এর পর 'ষ' হয়। ঋষি, কৃষক, উৎকৃষ্ট, দৃষ্টি, সৃষ্টি, বর্ষা, ঘর্ষণ, বর্ষণ ইত্যাদি। 
ট-বর্গীয় ধ্বনির সঙ্গে যুক্তবর্ণ হিসেবে 'ষ' যুক্ত হয়। কষ্ট, স্পষ্ট, নষ্ট, কাষ্ঠ, ওষ্ঠ ইত্যাদি। 
কতগুলো শব্দে স্বভাবতই 'ষ' হয়। ষড়ঋতু, রোষ, কোষ, আষাঢ়, ভাষণ, ভাষা, উষা, পৌষ, কলুষ, পাষাণ, মানুষ, ঔষধ, ষড়যন্ত্র, ভূষণ, দ্বেষ, পাষণ্ড, বাষ্প, ষোড়শ ইত্যাদি। 
মূল সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য-ষ থাকলে তা থেকে আগত বাংলা শব্দেও মূর্ধন্য-ষ থাকা বাঞ্ছনীয়। পোষ (পৌষ), পোষা (পোষণ), ঘষা (ঘর্ষণ) ইত্যাদি। 
সম্ভাষণসূচক শব্দে এ-কারের পর মূর্ধন্য-ষ হয়। কল্যাণীয়েষু, প্রীতিভাজনেষু, প্রিয়বরেষু, বন্ধুবরেষু, শ্রদ্ধাভাজনেষু, শ্রদ্ধাস্পদেষু, শ্রীচরণেষু, সুজনেষু, সুহৃদবরেষু ইত্যাদি। 
সন্ধিতে বিসর্গযুক্ত ই-কার বা উ-কারের পর কখপফ-এর যে কোনোটি থাকলে বিসর্গের স্থানে মূর্ধন্য-ষ হয়। এই নিয়মে নিচের শব্দগুলোতে 'ষ' হয়েছে। আবিষ্কার, জ্যোতিষ্ক, নিষ্কণ্টক, নিষ্কলঙ্ক, নিষ্কর, নিষ্কৃতি, নিষ্পত্তি, নিষ্ক্রমণ, নিষ্প্রদীপ, নিষ্প্রভ, নিষ্ক্রিয়, নিষ্পত্র, নিষ্পন্ন, নিষ্পাপ। 
যুক্তব্যঞ্জন গঠনের ক্ষেত্রে ট এবং ঠ বর্ণের পূর্ববর্তী শিসধ্বনি হিসেবে শুধু মূর্ধন্য-ষ যুক্ত হয়। অদৃষ্ট, অনাসৃষ্টি, অনির্দিষ্ট, অনিষ্ট, অন্তর্দৃষ্টি, অপচেষ্টা, আষ্টেপৃষ্ঠে, ইষ্ট, উৎকৃষ্ট, উপদেষ্টা, উপবিষ্ট, উষ্ট্র, একদৃষ্টে, দৃষ্টি, দ্রষ্টব্য, ধৃষ্টতা, নষ্ট। 
ই-কারান্ত এবং উ-কারান্ত উপসর্গের পর কতগুলো ধাতুতে 'ষ' হয়। অভিসেক > অভিষেক, সুসুপ্ত > সুষুপ্ত, অনুসঙ্গ অনুষঙ্গ, প্রতিসেধক> প্রতিষেধক, প্রতিস্থান > প্রতিষ্ঠান, অনুস্থান> অনুষ্ঠান, বিসম > বিষম, সুসমা > সুষমা ইত্যাদি। 
আরবি, ফারসি, ইংরেজি ইত্যাদি বিদেশি ভাষা থেকে আগত শব্দে 'ষ' হয় না। জিনিস, পোশাক, মাস্টার, পোস্ট ইত্যাদি। 
সংস্কৃত 'সাৎ' প্রত্যয়যুক্ত পদেও 'ষ' হয় না। অগ্নিসাৎ, ধূলিসাৎ, ভূমিসাৎ ইত্যাদি।
শ্রেণিবিভাগ বৈশিষ্ট্য উদাহরণ 
স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন 

যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে দুটি বাপ্রত্যঙ্গ পরস্পরের সংস্পর্শে এসে বায়ুপথে বাধা তৈরি করে, সেগুলোকে স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন বলে। এগুলো স্পর্শ ব্যঞ্জনধ্বনি নামেও পরিচিত। 

উচ্চারণস্থান অনুযায়ী এগুলোকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। 

কণ্ঠ স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: ক, খ, গ, ঘ 
তালু স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: চ, ছ, জ, ঝ 
মূর্ধা স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: ট, ঠ, ড, ঢ 
দন্ত স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: ত, থ, দ, ধ 
ওষ্ঠ স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন: প, ফ, ব, ভ
নাসিক্য ব্যঞ্জন যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ফুসফুস থেকে আসা বাতাস মুখের মধ্যে প্রথমে বাধা পায় এবং নাক ও মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায়, সেসব ধ্বনিকে নাসিক্য ব্যঞ্জন বলে। ঙ, ন, ম
উষ্ম ব্যঞ্জন 

যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে দুটি বাপ্রত্যঙ্গ কাছাকাছি এসে নিঃসৃত বায়ুতে ঘর্ষণ সৃষ্টি করে, সেগুলোকে উষ্ম ব্যঞ্জন বলে।

উচ্চারণস্থান অনুসারে উষ্ম ব্যঞ্জন ধ্বনিগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়: 

দন্তমূলীয় (স), তালব্য (শ) এবং কণ্ঠনালীয় (হ)। 

সালাম, শসা, হুঙ্কার প্রভৃতি শব্দের স, শ, হ উষ্ম ধ্বনির উদাহরণ। 

স এবং শ-কে আলাদাভাবে শিস ধ্বনিও বলা হয়ে থাকে। কারণ স, শ উচ্চারণে শ্বাস অনেকক্ষণ ধরে রাখা যায় এবং শিসের মতো আওয়াজ হয়। 

পার্শ্বিক ব্যঞ্জন যে ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভের ডগা দন্তমূল স্পর্শ করে এবং ফুসফুস থেকে আসা বাতাস জিভের দুই পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়, তাকে পার্শ্বিক ব্যঞ্জন বলে। 'ল' পার্শ্বিক ব্যঞ্জনধ্বনির উদাহরণ। 
কম্পিত ব্যঞ্জন যে ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভ একাধিক বার অতি দ্রুত দন্তমূলকে আঘাত করে বায়ুপথে বাধা সৃষ্টি করে, তাকে কম্পিত ব্যঞ্জন বলে। 'র' কম্পিত ব্যঞ্জনধ্বনির উদাহরণ। 
তাড়িত ব্যঞ্জন যে ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভের সামনের অংশ দন্তমূলের একটু উপরে অর্থাৎ মূর্ধায় টোকা দেওয়ার মতো করে একবার ছুঁয়ে যায়, তাকে তাড়িত ব্যঞ্জন বলে। 'ড়' ও 'ঢ়' তাড়িত ব্যঞ্জনধ্বনির উদাহরণ।